https://www.bartomansylhet.com/

5108

opinion

প্রকাশিত

১৫ জুন ২০২৪ ২১:৪৩

কুরবানীর ত্যাগের সাথে জনসচেতনতা অবশ্যই করনীয়- মিজানুর রহমান মিজান

মিজানুর রহমান মিজান: মুসলমানদের ধর্মীয়ও সামাজিক পবিত্র দু’টি উৎসব, প্রতি বৎসর উদযাপিত হয় ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা নামে মানুষের মনে জাগায় অনন্য খুশীর জোয়ার। এ আনন্দ ধনী গরীব রাজাপ্রজা পালন করেন অভিন্ন অনুভূতি ও অভিন্ন প্রেক্ষাপটে। 

তবে দু’টির ঈদের আনন্দে মাহাত্ব্যের পার্থক্য স্বল্প থাকলে ও আনন্দের ক্ষেত্রে নেই ভিন্নতা। একটি হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে প্রভুর সান্নিধ্য প্রাপ্তির একান্ত প্রত্যাশা এবং অপরটি মহান ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। এক হৃদয়জ অনুভূতি সম্পন্ন ঐকান্তিকতার প্রোজ্জল নিদর্শন।  ঈদের আনন্দ সার্বজনীন। যুগযুগ ধরে ঈদের আনন্দ সার্বজননীতার তরঙ্গায়িত ঢেউ তোলে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মনে জাগায় স্পন্দন, আন্দোলিত ও হিল্লোলিত। মানুষ হয় আত্মহারা, আলোকিত জন থেকে প্রতি জনে। কিন্তু ধনী গরীব পার্থক্য যাতে এ আনন্দে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে। 

সেহেতু মহান স্রষ্টা ঈদুল ফিতরে ফিতরা বন্ঠন এবং ঈদুল আযহার যাকাত কুরবানীর প্রথা চালুর মাধ্যমে সার্বজনীনতার অনুপম আদর্শভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের নির্দেশ কঠোর ভাবে পালন করার প্রথা চালু রেখেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে। আল্লাহ প্রদত্ত ও শিক্ষা ব্যবস্থা যথাযথ কর্তব্য ও দায়িত্ব বোধের সহিত পালন করা। আমাদের একান্ত আবশ্যক ও করনীয় বিবেচনায় রাখা অপরিহার্য্য। তবেই ঈদের আনন্দের সার্বজনীনতার রূপ সার্থক ও সফলতায় হবে পরিপূর্ণ।

জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হয় হযরত ইবরাহিম আ. কর্তৃক পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানী করার খোদার নির্দেশের স্বারক স্বরূপ। এদিন মুসলমানরা পশু কুরবানীর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যেকার পশুত্বকে বিসর্জন দেয়। সবচেয়ে প্রিয়তম সম্পদ আল্লাহর পথে নির্দেশ পালনের আদেশ মান্যের অনুপম আদর্শের সাক্ষ্য প্রদান করে থাকেন। বিশ্বের সকল মুসলমান কুরবানী করে স্বাক্ষী স্বরুপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সকলেই একই উম্মাহর অর্ন্তভূক্ত। একমাত্র আল্লাহর নামে উৎসর্গীকৃত পশুর কুরবানীতে আল্লাহর শ্রেষ্টত্বসহ মালিক বলে স্বীকৃতির প্রমান উপস্থাপিত হয়।

ঈদ আরবী শব্দ। উহার অর্থ আনন্দ বা খুশী। ঈদের শুভ আগমন বার্তা মানুষের হৃদয় থেকে হৃদয়ে জাগে উৎফুল্লতা, প্রতিটি প্রাণকে উজ্জীবিত করে নব বার্তা, চেতনার উম্মেষে। ঈদের দিনে মুসলমান মুসলমানের যে আত্মত্যাগের ন্যায় সাম্য ভ্রাতৃত্বের, সম্প্রীতির দিগন্ত প্রসারিতে একে অপরের সহিত সহানুভূতি প্রকাশ করি। তা যদি সারাটি বৎসর মেনে চলার আকুলতাকে সঙ্গি করি তবে সত্য সুন্দরের অনাবিল হাসি গোঠা মুসলিম বিশ্বে বহমানতায় সমাজ জাতি, রাষ্ট্র হবে বিরল আনন্দে ভরপুর। ধনী গরীব পার্থক্য কিছুটা হলেও অনাবিল প্রশান্তিতে হবে মূর্ত প্রতীকের সমুজ্জল ঈদুল আযহার আনন্দ, ত্যাগ, কুরবানী পাশাপাশি আমাদের হৃদয় কুঞ্জে সচেতনাসহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে সর্তক নজর রাখা একান্ত কর্তব্য। কারন ‘‘পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ’’।  কুরবানীর পর উচ্ছ্বীষ্ট অংশ, বর্জ, রক্ত চামড়া ইত্যাদিকে অত্যন্ত সর্তক সচেতনতায় যদি যথোপযুক্ত ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ হই তবে দুর্গন্ধ মুক্ত নির্মল পরিবেশ, শান্তির সুনির্মল বিশুদ্ধ বায়ু প্রাপ্তির পথ হবে প্রকারান্তরে সুগম। কারন দুর্গন্ধ বায়ূসহ পরিবেশ করে দূষিত ও কলুষিত। আনন্দের পাশাপাশি বায়ূ ও পরিবেশ নির্মল রাখা আমাদের অবশ্য কর্তব্য ও দায়িত্ব।

 সুতরাং  সকলেই সচেষ্টতার সহিত যথাযথ কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনে মনোনিবেশ অপরিহার্য। কুরবানী পশুর রক্ত, উদ্ধিষ্ট অংশটুকু সঠিক সময়ে মাটিতে গর্ত করে পুতে রাখলে পরিবেশ বান্ধব সচল থাকবে যা আমাদের জীবনের জন্য অবিচ্ছেদ্য অংশের অর্ন্তভূক্ত। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সর্তকতা সমাজের উপকারের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পূর্ণ একটি পূর্নাঙ্গ দাবী। এ দাবী একার নয় সবার ক্ষেত্রে সমহারে প্রযোজ্য।

বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য, সংহতি, ইসলামী চেতনাকে উজ্জীবিত, অনুপ্রাণিতে ঈদের গুরুত্ব, মাহাত্ব্য অপরিসীম। ঈদের দিনের ভ্রাতৃত্ববোধের আর্দশিক চর্চা অব্যাহত থাকুক। প্রাণে প্রাণে শান্তি, মিলনের অপূর্বতা অটুট থাকুক সদা এ দৃঢ়তর প্রত্যাশায়।

লেখক: সাবেক সভাপতি, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব।