বাড়িতে থাকলে তুলসী, উপকার হবে কী কী
সাধারণত চার ধরনের তুলসী গাছের দেখা পাওয়া যায়। তারা হল রাম তুলসী, কৃষ্ণ তুলসী, ভানা তুলসী ও কাপুর তুলসী। ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে সাধারণত এই ভেষজগুণ সম্পন্ন গাছ দেখতে পাওয়া যায়। প্রাচীনকাল থেকেই প্রতিটি বাড়িতে তুলসী গাছ পোঁতা ও তা রক্ষণাবেক্ষণের রেওয়াজ চলে আসছে। অনেকে একে স্বর্গ বা বিষ্ণুর আবাসস্থান বৈকুণ্ঠের প্রবেশদ্বার হিসেবেও মনে করে। এমনকী পুরো গাছের বিভিন্ন স্থানে নানা দেবতা বাস করেন বলেও ধর্মীয় বিশ্বাস।
আজকের ইঁদুর দৌড়ের জীবনে সবাই যখন কমবেশি মানসিক চাপ বা অবসাদে ভুগছেন তখন অব্যর্থ ওষুধ হিসেবে কাজ করে তুলসী। আপনি প্রতিদিন যদি ১০ থেকে ১২টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান তাহলে রক্তচাপের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণে থাকবে মানসিক অবসাদও।
ত্বক, চুল ও দাঁতের ভালোর জন্য তুলসীর ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখে বা মাথায় এর রস মাখলে ত্বক ও চুলে গ্লেস আসার পাশাপাশি হবে না ব্রণ। চুল পড়া কমার সঙ্গে সঙ্গে ভালো থাকে মাড়ি ও দাঁতের স্বাস্থ্য।
তুলসীর পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করার পর কয়েক ফোঁটা সরষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপর তা দিয়ে দাঁত মাজলে চুল ও ত্বক হবে উজ্জ্বল। আচমকা দাঁতের ব্যাথা হলেও অবর্থ্য টোটকার মতো কাজে দেব তুলসী। এর জন্য আধ চা চামচ গোলমরিচের গুঁড়োর সঙ্গে ৪ থেকে পাঁচটা তুলসী পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিতে হবে। তারপর সেটা ব্যাথার জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে কিছুক্ষণ। দিনে তিনবার এটি লাগালে কদিনের মধ্যেই কমবে ব্যাথা। পরে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে পুরোপুরি রোগ মুক্ত হওয়ার জন্য।
ঠাণ্ডা লেগে জ্বর হলে খালি পেটে হাফ লিটার জলের সঙ্গে এক থেকে দু চা চামচ এলাচের গুঁড়ে ও সাতটা মতো তাজা তুলসী পাতা ধুয়ে জলে দিয়ে ফোটান। জল অর্ধেক হওয়ার পর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে দু-তিন ঘণ্টা অন্তর চুমুক দিয়ে খান। দরকারে মেশাতে পারেন মধুও। তাহলে জ্বর কমার পাশাপাশি কমবে গলাব্যাথা।
মাথাব্যাথা সারাতেও কাজে আসে তুলসী। বেশ কয়েকটি তুলসী পাতা দিয়ে ২ কাপ জলে ভালো করে ফোটান। তারপর জল ঠাণ্ডা করে রেখে দিন। যখন মাথাব্যাথা হবে তখন একটি কাপড় সেটিতে ভিজিয়ে ভালো করে নিংড়ে নিয়ে মাথায় জলপট্টি দিন। তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যে মাথাব্যাথা কমবে আপনার।
ভিটামিন সি ও জিঙ্ক রয়েছে তুলসী পাতায়। তাই তুলসী দিয়ে তৈরি করা চা শক্তিশালী করবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে। এর ফলে লিভার, ফুসফুস ও ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণও কমাবে তুলসী।
বিশুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত তুলসী গাছ বাড়ির দরজা ও জানালার কাছে রাখলে ক্ষতিকারক গ্যাস ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না। সেইসঙ্গে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধও করতে পারে সনাতন ধর্মের মানুষরা এর ব্যবহার করতে পারেন রক্ত পরিষ্কারের কাজেও।
ডিসক্লেমার : ধর্মীয় বিশ্বাস নিজস্ব। এ ব্যাপারে কোনও মতামত এবিপি লাইভের নেই। এবিপি লাইভ ধর্ম সম্পর্কিত কোনো সম্পাদকীয় / সম্পাদক-নিয়ন্ত্রিত তথ্য, পরামর্শ প্রদান করে না। প্রদত্ত পরামর্শ ও তথ্য প্রয়োগের আগে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।