ভেটেরান্স ক্রাইসিস লাইনে সাহায্যের জন্য রেকর্ড সংখ্যক আবেদন
আমেরিকার সাবেক সেনা সদস্যদের ক্রাইসিল লাইনে সাহায্যের জন্য আবেদন অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট বলেছে, নাইন ইলেভেনের পরে প্রবীণ সেনাসদস্যদের পরিষেবা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ বেড়েছে। আত্মহত্যার হটলাইনটি গত মার্চ মাসে ৮৮ হাজারেরও বেশি কল, টেক্সট এবং চ্যাট পেয়েছে। এনবিসি নিউজ দ্বারা প্রাপ্ত নতুন ফেডারেল ডেটা অনুসারে এটিকে মাসিক যোগাযোগের সর্বোচ্চ রেকর্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত মাসের পরিসংখ্যান, মহামারীর প্রথম ১০ মাসের ব্যস্ততম সময়ের তুলনায় প্রায় ২৮ শতাংশ বেশি এবং ২০২১ সালের আগস্টের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি, মূলত তালেবানদের হাতে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়ার পরে এমন কলের সংখ্যা বেড়েছে।
ভেটেরান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পরিসংখ্যান দেখায় যে, বার্ষিক যোগাযোগের সংখ্যা ২০২০ সালে প্রায় ৭ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ১৫ শতাংশ বেড়ে ২০২২ সালে প্রায় ৮ লাখ ৯৬ হাজারে পৌঁছেছে। তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রায় ৭৪ হাজার যোগাযোগ রেকর্ড করা হয়। ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রায় ৬৭ হাজার এবং ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রায় ৬৭ হাজার ৫০০ টি যোগাযোগ রেকর্ড করা হয়েছিল।
২০১১ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ অনুসারে, ইরাক এবং আফগানিস্তানে কাজ করা প্রায় ৬২ শতাংশ সৈনিক বলেছেন তাঁরা এমন কাউকে চিনেন, যিনি কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন। তার উপরে একটি অলাভজনক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ইরাক এবং আফগানিস্তান ভেটেরান্স অফ আমেরিকা দ্বারা পরিচালিত একটি সদ্য প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন প্রত্যাহারের ঘটনার ফলে প্রায় ৪৯ শতাংশ প্রবীণ সেনাসদস্য মানসিক ট্রমায় ভুগছেন।
অলাভজনক সংস্থার একজন সিনিয়র উপদেষ্টা ম্যাট জেলার বলেছেন, তিনি এবং আরও অনেকেই কয়েক হাজার আফগান দোভাষী এবং সহযোগীদের পিছনে ফেলে এসে চরম অপরাধবোধের যন্ত্রণায় ভোগছেন। যা একটি অদৃশ্য ক্ষত বলে তাঁরা উল্লেখ করেছেন। তিনি একে নৈতিক আঘাত বলে অভিহিত করেছেন। ২০০৮ সালে আফগানিস্তানে নয় মাস কাজ করা জেলার বলেন, এটি আত্মার আঘাত।
আফগানিস্তান প্রত্যাহারের অবিলম্বে, ভেটেরান্স ক্রাইসিস লাইনে সহায়তার জন্য কলগুলি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ভেটেরান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা। ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্সের মতে, ইরাক ও আফগানিস্তানে অভিযানের সময় ৬ হাজার ৮০০ জনের বেশি মার্কিন সেনা সদস্য মারা গেছে। ২০২১ সালে, ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে , নাইন ইলেভেন পরবর্তী যুদ্ধের ৩০ হাজারেরও বেশি পরিষেবা সদস্য এবং প্রবীণরা আত্মহত্যা করে মারা গেছে। যুদ্ধে মারা যাওয়ার চেয়ে যা চার গুণেরও বেশি।
ভেটেরান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এক বিবৃতিতে বলেছে , বৃদ্ধিগুলিকে সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট ডেটা নির্দেশনা নেই। তবে আউটরিচ প্রচারাভিযান এবং ক্রাইসিস লাইনের নতুন ৯৮৮ ফোন নম্বর চালু সহ কারণগুলির সংমিশ্রণ সম্ভবত আরও বেশি লোককে হটলাইন ব্যবহার করতে পরিচালিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক প্রবীণরা বিশ্বাস করেন যে, উত্থানটি ইরাক এবং আফগানিস্তানের ২০ বছরের সংঘাতের সমস্যাপূর্ণ সমাপ্তির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। আফগানিস্তানে তিনটি সফর করা অবসরপ্রাপ্ত সেনা লেফটেন্যান্ট কর্নেল স্কট মান বলেছেন, আমরা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সুনামির প্রথম প্রান্তে আছি।