আদালতে ট্রাম্পের আত্মসমর্পনঃ জামিন লাভ
ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়েছি আমরা। যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট অপরাধ আইনে অভিযুক্ত হয়ে আদালতে আত্মসমর্পন করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিউইয়র্কের আদালতে আত্মসমর্পন করেন ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার। তাঁকে ৩৪টি অপরাধে অভিযোগ আনা হয়েছে। পর্ণ তারকার মুখ বন্ধ করা সহ তাঁর ব্যবসা পরিচালনায় জালিয়াতি সংক্রান্ত অপরাধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঘরে ঘরে লোকজন টিভির সামনে ঠায় বসে ম্যানহাটনের আদালতের সামনে থেকে লাইভ সম্প্রচার দেখছিলেন। আগের দিন থেকেই আদালত এলাকা সাংবাদিকদের সমাবেশে পরিণত হয়েছিল। মঙ্গলবার ভোর থেকে বেলা ২টা ৩০ মিনিটে শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনায় সাংবাদিকরা ধারা বর্ণনা করছিলেন। আদালত এলাকায় ট্রাম্প সমর্থক ও বিরোধীদের পাশাপাশি অবস্থান নিতে দেখা গেছে। দুই পক্ষে উত্তেজনা ছড়ালেও উল্লেখযোগ্য কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ডেমোক্র্যাট প্রধান নিউইয়র্কে ডনাল্ড ট্রাম্প বিরোধিরা এমনিতেই শক্তিশালী। এরপর বিপুল সংখ্যক লোকজন তাঁর সমর্থনে আদালত এলাকায় অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তাঁদের হাতে শোভা পাচ্ছিল ট্রাম্পের সমর্থনে ব্যানার ফেস্টুন। ট্রাম্প বিরোধীরা থেমে থেমে উল্লাস প্রকাশ করছিল। নিউইয়র্ক সিটির ৩৪ হাজার পুলিশ কর্মকর্তাকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। শুধু আদালত এলাকাই নয় , নগর জুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
নিজেকে আদালতে নির্দোষ দাবী করে জামিন গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ আইনের বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। আদালত আগামী দিনগুলোতে তা অবমুক্ত করলেই জনসাধারণকে তা জানার সুযোগ হবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কের ম্যানহাটান আদালত চত্বরে ঢোকার আগে সেখানে সমবেত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ –এ তাঁর শেষ কথা ছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এমনটা হতে পারে, এটা বিশ্বাস করতে পারছি না।
সাবেক পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যান সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আদালতে ঢোকার পর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে নেওয়া হয় পুলিশ হেফাজতে। আদালত চত্বরে ঢোকার আগ মুহূর্তে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ এ ট্রাম্প বলেন, ‘আদালত চত্বরকে অবাস্তব মনে হচ্ছে! ওয়াও, তারা আমাকে গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে এমনটা হতে পারে, বিশ্বাস করতে পারছি না।’ শেষে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর শ্লোগান লেখেন, ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন।
প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় আদালতে বিচারের মুখে পড়েছেন। সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে স্টরমি ড্যানিয়েলসকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়ার মামলায় বিচারের মুখোমুখি হলেন ট্রাম্প। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে সম্পর্কের বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তাঁকে ওই অর্থ দেওয়া হয়। এই অর্থ দেওয়া আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ নয়। কিন্তু এই অর্থের বিষয়টি সম্পদ বিবরণীতে যথাযথভাবে উল্লেখ না করে গোপন করেন ট্রাম্প। যদিও বেআইনি কিছু করেছেন—এমন কথা বারবার অস্বীকার করছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।