মেয়রের বাসভবন গ্রেসি ম্যানশনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

মেয়র এরিক অ্যাডামস নিউইয়র্কে বাংলাদেশী জনসমাজকে তাঁর বন্ধু উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলাদেশীরা একটি উজ্জ্বল কমিউনিটি। বিভিন্ন পেশায় ইতোমধ্যে তারা অভুতপূর্ব সাফল্য লাভ করেছেন। বাংলাদেশীরা কাজের ক্ষেত্রে খুবই কর্তব্যপরায় উল্লেখ করে মেয়র বলেন নিউয়র্কের অগ্রযাত্রায় তাদের অবদান উল্লেখ করার মত।
বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো নিউয়র্ক সিটি কাউন্সিলের মেয়র এরিক অ্যাডামস বাংলাদেশি কমিউনিটির সম্মানে রিসিপশনের আয়োজন করেন। ২১ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ম্যানহাটনে মেয়রের সরকারি বাসভবনে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ হেরিটেজ মান্থ উপলক্ষে এই পার্টির আয়োজিত সংবর্ধনা উপলক্ষে গ্রেসি ম্যানশনের মেয়র ভবন পরিণত হয় বাংলাদেশীদের মিলনমেলায়। সিটি প্রশাসন ছাড়াও নিউইয়র্কের জনপ্রতিনিধি আর ব্যাপক প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম, নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার ছাড়াও কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এতে যোগ দেন। এছাড়া প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্য খাতসহ নিউয়র্কের বিভিন্ন সেক্টরে সফল পেশাজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে।
সিটি মেয়রের দক্ষিণ এশিয়ার বিষয়ক অ্যাডভাইজারি কমিটির অন্যতম সদস্য এবং কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার ফাহাদ সোলায়মানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয় এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। অনুষ্ঠানের কর্মসূচির মধ্যে ছিলো মেয়র ছাড়াও অতিথিদের শুভেচ্ছা বক্তব্য, সম্মাননা প্রদান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কমিউনিটি সেবায় অবদান রাখার জন্য মেয়রের পক্ষ থেকে ৫ বাংলাদেশীকে সাইটেশন প্রদান করা হয়। এরা হলেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, শাহ জে চৌধুরী, রুতবা তাবাসুম, রিমা বেগম এবং বাবু খান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মেয়র অফিসের সহকারী পরিচালক উমিয়া হাসান। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে স্মৃতি সৌধের রেপ্লিকা মেয়র অ্যাডামসকে উপহার দেন কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম। এছাড়া নিজের তোলা হাজারো ছবি দিয়ে মেয়রের ছবি তুলে তার উপহার দেন ফটোসাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, বাংলাদেশীরা কাজের ক্ষেত্রে খুবই কর্তব্যপরায়ণ উল্লেখ করে মেয়র বলেন নিউয়র্কের অগ্রযাত্রায় তাদের অবদান উল্লেখ করার মতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের খুবই আস্থাশীল বন্ধু। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশীদের সব উৎসব যুক্তরাষ্ট্রেরই উৎসব। এসব উৎসব, আনুষ্ঠানিকতায় নিউয়র্ক সিটি কাউন্সিল সব সময় অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে। তিনি সিটির উন্নয়নে কমিউনিটি সেবায় নিজেদের আরও সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।
ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, দিনটি সকল বাংলাদেশীদের একটি গর্বের দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আজ সেটি আরও বেশি মহিমান্বিত হলো। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব, কারুজ্জামান বকুল, ত্রিনিয়া হাসান সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়া জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী প্রিয়া ডায়েস ও তার দল দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন।